(আহমদ রফিক : জন্ম ১৯২৯ সালের ১২ই সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামে) স্বদেশ এখন মানচিত্রে আঁকা সুশ্রী রঙিন পতাকায় লেখা, তবু খুঁজে ফিরি সবার স্বদেশ জানি না সে �
বিভূতিভূষণের ‘কিন্নর দল’ গল্পটি আমরা অনেকেই পড়েছি। গ্রামের সবচাইতে সচ্ছল পরিবারের বড় ছেলে শ্রীপতি বৌ নিয়ে আসেন কলকাতা শহর থেকে। সে-বৌ এসে পড়েন এক জীর্ণ গ্রামে, যেখানে লোকে খেতে পায় না
আধুনিক বাংলা সাহিত্যে সৃজনশীল রচনার যে সম্ভাবনা ও বিকাশ দেখা যায়, মননশীল রচনার ক্ষেত্রে তা কিছুটা অনুপস্থিত। চিন্তাশীল রচনা তথা মননশীল সাহিত্য বাংলা সাহিত্যের অন্যান্য শাখার তুলনায় অন�
এই লেখাটির একটি উপশিরোনাম হতে পারে, ‘যতীন সরকারকে কেন দরকার’। বস্তুত এই শিরোনামটি আমি দিতে বলেছিলাম তাঁর ৬০তম জন্মবার্ষিকীতে তাঁর সম্পর্কে কয়েকজন লেখক-সাহিত্যিকের মন্তব্য নিয়ে করা সংব�
নানা কারণেই নিশ্চয় – হামীম কামরুল হক আমাকে হায়াৎ মামুদ সম্পর্কে তাঁর সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্যে বললেন যে, হায়াৎ মামুদ ছাত্রছাত্রীকে ব্যতিক্রমহীনভাবে যে-কথাটি বলতেন তা হচ্ছে, বাংল�
পুরনো দিনের একটা গানের কথা মনে আছে আপনাদের? সেই যে – ‘গান নয় জীবনকাহিনি, সুর নয় ব্যথার রাগিনী’, রুনা লায়লা গেয়েছিলেন তাঁর অপূর্ব দরদি কণ্ঠে, সেটির কথা বলছি। গানটা বন্দিনী সিনেমার, লিপসিং �
সিদ্ধান্তটা নিতে বারেকের কয়েক মাস দেরি হয়ে গেল। হোমসিকনেস। অভাব-অনটনের ঘানি টানতে টানতে মেরুদণ্ড বাঁকা হয়ে গেলেও বাড়ি ছেড়ে দূরে কোথাও কাজের জন্য যেতে ওর মন সায় দেয় না। বিয়ের আগে যু
প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের শান্ত সমাহিত চিত্তের গভীর উপলব্ধির কথা বলতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ জানিয়েছিলেন, ‘মানুষের মধ্যে বৈচিত্র্যের সীমা নেই। সে তালগাছের মতো একটিমাত্র ঋজুরেখায় আকাশের দিকে
বিংশ শতকের ষাটের দশক বাংলাদেশের কবিতায় এক যুগান্তকারী দশক। যে-দশক ফুলে-ফলে ভরিয়ে রেখেছে বাংলাদেশের কবিতার জমিন। কবিতা যাঁরাই লিখেছেন এই সময়ে, তাঁরাই কবি হয়ে উঠেছেন, বিষয়টি এমন নয়; কি�
সন্ধেয় যখন জানতে পারে সাঈদুল, ভালো এক খবর, যাব কি যাব না ভাবনায় আরো একবার এদিক-ওদিক তাকিয়ে শেষমেশ পুরনো মাফলার দিয়ে মুখ-নাক ঢেকে বের হয়ে যায়। তখন আলিয়া পেছন থেকে ডাক দেয় – ‘বাবা এই সন্�
‘বাংলার রেনেসাঁস’ নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে এর ভূমিকায় অন্নদাশঙ্কর রায় উল্লেখ করেছেন : ‘এতকাল আমরা যেটাকে বাংলার রেনেসাঁস বলে ঠিক করেছি বা ভুল করেছি, সেটা ছিল অবিভক্ত বাংলার ব্যাপার। পার্�
১৯৩৮-এ অনেকগুলো খাতায় কবিতা লিখেছিলেন জীবনানন্দ দাশ; তখন বসবাস করছিলেন বরিশালে। এসব খাতার বেশ কয়েকটি কলকাতায় ভারতের জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রে ‘রেয়ার কালেকশন’ সেকশনে সংরক্ষিত রয়েছে। সে
ভাষ্য ও ভূমিকা : সুরেশ রঞ্জন বসাক ভাষ্য সাহিত্যে মানচিত্র বা দেশকে রূপকথা নয়, রূপক ও রূপকল্প হিসেবে ব্যবহার ব্যাপক না হলেও দুর্লক্ষ্য নয়। গার্সিয়া মার্কেস – বিশেষজ্ঞ ক্রিস্টোফার লিটল তা
(রবীন্দ্রনাথের প্রতি আন্না তড়খড়) পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে চেনা গন্ধ, চুমুর আওয়াজ ভুলেও তোমার চোখ তাকাল না কেন?! একদিন, দুপুর-সময় নির্জনতা কোলে নিয়ে পুরো বাড়ি ঘুমে আমিও তোমার কোলে মাথা পেত�
মাঝে মাঝে কোনো একলা বিকেলে করুণ মূর্ছনার মতো বাজতে থাকি নিজের ভেতরে রোদ নেমে যায় দৃশ্যাতীত পথের ওপারে; তখন কুয়াশা নামে সন্ধ্যায় – আর চারপাশে শুকনো ধুলো ওড়ে, ধূসর বেদনার মতো শুকনো ধুলো ওড
হিমকর! এই হিমেল দিনেও খোলা প্রান্তরে এসে উপস্থিত হয়েছি, তোমার রূপমাধুর্যে সৌন্দর্যমণ্ডিত হবো আমিও! আমারও জমেছে মেদ ও ক্লেদ! আলোকশূন্যতা নিয়ে বড় অসহায় হয়ে আছি! অঙ্কুরোদ্গমও হচ্ছে না চা�
নিঃস্ব ভাষাপত্র ওড়ে রাত্রির পাঁজরে নিদ্রিত বসন্তের মুখর পাখি দেখার উপমা নেই, পৃষ্ঠাজুড়ে অসমাপ্ত দীর্ঘবৃত্ত অন্ধ দীর্ঘশ্বাস ভুল ছন্দে রাত্রির বিন্যাস বিমুখ তীব্র হাওয়ার নিচে বিভ্রম […]
হৃদয় শুকিয়ে গেলে অরণ্যও ন্যাড়া হয়ে যায়; অক্ষয় মালবেরী থেকে ইমনকল্যাণ রাতের কম্বলের ওম বুকের উঠোনের আলপনা বটের শিকড়ে বাঁধা নাও – মুহূর্তেই ভেসে যায় সুনামির জলে। হেমন্তের ডায়েরি ঠ�
হাঁটো ক্রোশ পথ। তার পরেই মাঠঘাটভরা দুপুর-ঝিম বাঁশ-কুটোঘেরা টং-ঘরের সিঁড়ি বেয়ে নেমে তৎক্ষণাৎ ডাল-ঝোলমাখা ভাতসুখের ঠিকানার দিকে দিন হাঁটে মাটি-রোদে-ঘাসে পোঁদ পেতে কামলারা বসে গাছতলায়, খোল
ওরা তোমাকে বলে নতুন পৃথিবী, কিন্তু আমি চোখ বন্ধ করে দেখি, শীতল একটা মেঘ ইতিহাস আবৃত করে রেখেছে। দুঃখ প্রাচীন শব্দ। এখন বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি হয় প্রতিটি শব্দের ওপর, প্রতিটি পঙ্ক্তির ওপর, যা লি�
সুতীব্র আলোর অর্থ অন্ধকারে একা আলো যদি বিপরীত হয় সৌন্দর্য শরীর থেকে দূরে সরে যায় তুমি তো নিজেই আলো আলোকের ঝর্ণাধারায় তোমার কৌশল যতই প্রসাদগুণে ইন্দ্রজাল হয়ে নিজেকে বিকাশ করে ময়ূখে লু�
শীতের অরণ্যে ভুয়া তদন্তকারী প্রতিপক্ষ হয়ে উন্মাদের মতো দৌড়াতে থাকে! যার পিছু নিয়েছে সে সাবেক যোদ্ধা? না বুদ্ধিজীবী? বহুদিন ঘরের মধ্যে আবদ্ধ থাকতে থাকতে এক ধরনের অস্থ
এয়ারট্রেনেরঅপেক্ষায়বসেআছি রাতজিরোআওয়ারনির্দেশকরছে মারিজুয়ানারগন্ধেবাতাসভারিহয়েআছে অদূরেতরলগরলহয়েনামছে যেনলাভাগলেপড়ছেজ্বালামুখথেকে মানুষেরকলকব্জাগুলোনড়ছে অবিকলযন্ত�
পথে পথে শুকনো পাতার ঘুমভাঙা ঘুম বাতাস যেন স্মৃতির পালকবাড়ি – ছুঁয়ে যায় হৃদয়ের সবুজ কোটর। ভোরের শিশির এক কবির নীরব চিঠি ধানের ছায়ায় শীতের প্রথম স্পর্শ জাগে, বাঁশবনে পাখির ডাকে মেঘের ন�
নথখোলা নদীর ওপার থেকে মৃত মানুষের গন্ধ ভেসে আসে খুব চেনা চেনা মনে হয় কবে প্রবল প্রতাপে মারা গেছে বনেদি বৃক্ষের তলে তারপর ভেসে ভেসে জোয়ারে কাঁদায় বৃষ্টির কারসাজি চারদিকে তবু নাক বুঁজে আস�
তোমার মিনতিপত্র যথাভাবে লুপ্ত করে পড়ে আছি প্রেতের পাড়ায় আগে ছিল পথ, অন্যত্র গমনে যেতে, মনজিল : অচিন্ত্যনগর প্রকৃত নিদ্রাবোধে আমাদের সব ভালো লাগে বিপরীতে সবকিছু প্রেতের প্রমাণ গূঢ় সত্য-�
একটা বেজে অনন্তকাল দীর্ঘস্থায়ী রাতে সহস্র সাপ ফণা তোলে তোমার ইশারাতে পাথর চোখে জমে শিশির পাতার চোখে ঘুম বজ্রপাতে জীর্ণ পাঁজর পৃথিবী নিঃঝুম থমকে থাকে সময়গতি ঘুমের সঙ্গে আড়ি কেউ তো নয় তো
চোখ রাখো গূঢ় সংকেতের দিকে – ভূ-রাজনীতির মতো পাঠ করতে থাকো এই ইঙ্গিত, দুষ্পাঠ্য সময়ের ইশারা – ওই দূরে লাল-নীল যত আলোর গুঞ্জরণ, লিখে রাখো – লিখে রাখো যাবতীয় কুহক সমাচার – ম্যান্ডোলিন বাজাচ্ছ�
এই পৃথিবীর অপর প্রান্তে তুমি, হয়তো সেখানে রোদ্দুর করে খেলা, রাত জেগে আঁকি আকাশের ক্যানভাসে তোমার চোখের তপ্ত সাগরবেলা! কন্যা তোমার কী নাম দিয়েছি জানো? জানবে না তুমি, জানবে না কোনোদিন! তোমার র
তোমাকে লিখবো লিখবো করে কত দিন কেটে যায় আমার! সকাল দুপুর বিকেল গড়িয়ে রাতের আঁধার সবকিছু কেমন গ্রাস করে নেয় মোটা ভাত মোটা কাপড়ের অধিকারটুকুও। বেঁচে থাকার জন্য এই যা – একমাত্র ‘মধ্যবিত্ত�
হামেশাই শেষরাতে ভেঙে যাচ্ছে ঘুম। কোনিয়া থেকে কিছু বাঁশির সুর দিল কা দরগায় এসে ধাক্কা খাচ্ছে। কত কিছু করে ইনসান; সোনার চিরুণিতে প্রেয়সীর চুল মনে মনে আঁচড়ে দিতে হয় আবার গরমে ঘামে-ভেজা আন�
রধোরেনড্রোনের পাপড়িতে পাহাড়ি পরাগ মেখে মিটিমিটি অভিবাদনে ফুটে আছে আদুরে বালিকা। পাহাড়ের খাঁজে খাঁজে বীণা হাতে সরস্বতী বিদ্যার ফুলে আলো জ্বেলে হাসিতে মুখরিত লুম্বিনী বৃক্ষের তল থেকে �
এই রক্ত ও রোদন ভরা বিষাদ বসন্তে – সন্ধ্যার কিছুটা আগে ছেঁড়া চিরকুট হাতে হেঁটে যাই গোধূলির লালাভ আলোয় এক রক্তজবার বনে! চেরাকাঠে বীণা বেজে উঠতেই বুঝি ফের এসে গেছে বিলাপ বসন্ত – আবারো শোনা যা�
হোসাইনি পরিবার। জামাল হোসাইনি বাবা, তার দুই ছেলে – সায়েফ হোসাইনি ডাক্তার, আর ছোট ছেলে অমিত হোসাইনি অর্থনীতিতে পিএইচ.ডি। সায়েফ ইএনটি বিশেষজ্ঞ, প্র্যাকটিস ভালো। অমিত অস্ট্রেলিয়ায় থাকে, ভ
নতুন কিছু চান বস। সম্পাদকের টেবিলে বসে তাগড়া গোঁফে তা দিতে দিতে একটাই কথা তাঁর, ‘ভাবুন মিস কবীর। নতুন অ্যাপ্রোচ আনুন। টাকা কোনো ব্যাপার নয়। আমরা এবারের ঈদসংখ্যাটি দিয়ে আলোড়ন তুলতে চাই �
ভূমিকা কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাওয়া প্রাচীন মানুষের জীবনযাত্রা, সংস্কৃতির নিদর্শন হলো প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। প্রত্নতত্ত্ব একটি নির্দিষ্ট সময় ও ভূখণ্ডে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া মানুষের