কালি ও কলমের দুই দশক পূর্ণ হলো। যে-কোনো সাহিত্য সাময়িকীর জন্যে এই দীর্ঘ সময়ের টানা প্রকাশনা নিঃসন্দেহে এক মাইলফলক। এখানে একটু স্মরণ করা যায় যে, কালি-কলম নামে একটি সাহিত্যপত্র ছিল অবিভক্ত বাংলায়, প্রকাশিত হতো কলকাতা থেকে, প্রকাশকাল ১৯২৬। শুরুতে সম্পাদক ছিলেন তিনজন – মুরালীধর বসু, শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায় ও প্রেমেন্দ্র মিত্র। তবে শেষের দুই কথাসাহিত্যিক একে […]
হাসনাতভাইয়ের জন্য লেখা হলো পর
হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিনের অনুষ্ঠান হচ্ছে ‘ঢাকা ক্লাবে’। সন্ধ্যাবেলায় সেখানে অনেক লেখক ও টিভি নাটকের অভিনেতা-অভিনেত্রী একত্রিত হয়েছেন। আবুল হাসনাতও ছিলেন। মানে আমাদের সবার প্রিয় হাসনাতভাই। এক ফাঁকে আমাকে আড়ালে ডেকে নিয়ে তিনি বললেন, ‘কালি ও কলম নামে আমরা একটা মাসিক সাহিত্য পত্রিকা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আবুল খায়ের লিটুর ‘বেঙ্গল ফাউন্ডেশন’ থেকে পত্রিকাটি বেরোবে। আমাদের সঙ্গে […]
দেখতে দেখতে কুড়িটা বছর সম্পন্ন করল বাংলাদেশের একটি সাহিত্যপত্রিকা। এ এক অভূতপূর্ব ঘটনা। ’৪৭-এর আগে কিংবা দেশভাগের পরে এবং অবশ্যই স্বাধীন বাংলাদেশের ওই পূর্ব ভূখণ্ডে দীর্ঘজীবী সাহিত্য পত্রিকার সংখ্যা খুব কম। সেক্ষেত্রে কালি ও কলম অবশ্যই এক ঐতিহাসিক ভূমিকা রেখেছে। লেখার মান ও মুদ্রণসৌকর্যের বিচারে এবং অঙ্গসৌষ্ঠব এবং উচ্চমানের কাগজের নিরিখে এই পত্রিকা শুধু বাংলাদেশে […]
আমার কালি ও কলম, আমাদের কালি ও কলম
কালি ও কলম বাংলাদেশের শুদ্ধ সাহিত্য ধারায় এক অনন্য প্রগতিশীল সাহিত্যপত্রিকার নাম। ২০০৪ সালে প্রথম কালি ও কলম সাহিত্য, শিল্প, সংস্কৃতি বিষয়ক বাংলা মাসিক পত্রিকা হিসেবে যখন আমাদের হাতে এলো, যারপরনাই আনন্দে আমরা কবি-লেখক-শিল্পী-সাহিত্যিকবৃন্দ তুমুলভাবে অভিনন্দন জানিয়েছিলাম। আপ্লুত হয়েছিলাম একজন কবি হিসেবে, এই জন্যে যে, নতুন এক শুদ্ধতম পরিসর পেলাম, যেখানে নিজের সৃষ্টিশীল কাজ প্রকাশের […]
আধুনিকতা, উত্তর-আধুনিকতা এবং আমরা
সমকাল সব সময়ই আধুনিক। এই ধারণা কাল নির্ভর, সময়ের পরিপ্রেক্ষিতেই এমন ধারণা এবং বিশ্বাসের উৎপত্তি। সাধারণ আলোচনায় বর্তমানের সঙ্গে অতীতের ভেদরেখাসূচক এই অভিধায় পরিচিতিমূলক বিশেষ বৈশিষ্ট্যের ভূমিকা গৌণ, এমনকি সেসব উহ্যই থাকে। সমকাল আধুনিক হবে, এটা স্বতঃসিদ্ধ বলে ধরে নেওয়াই নিয়ম। এই ‘বিবেচনায়’ ‘আধুনিক’ একবার নয়, যতদিন অতীতকে পিছনে রেখে বর্তমান এসেছে প্রতিটি সমকালকেই আধুনিক […]
লোকসাহিত্য-সৃষ্টি ও বাঙালি নারী : জসীমউদ্দীনের অবলোকন
সংকলন ও ভূমিকা : আবুল আহসান চৌধুরী এক ‘সাহিত্য জনজীবনের বহিরঙ্গ এবং অন্তরঙ্গ লোকের আলেখ্য। পদ্মা, মেঘনা, ধলেশ্বরী নদীর তীরে তীরে, এদেশের উদার গগন তলে, অবারিত মাঠের কোলে যাহারা ঘর-বসতি করিয়া জীবনের কাহিনী রচনা করে, আমাদের সাহিত্য তাহাদেরই কথায় ভরপুর। কি আমরা হইতে চাহিয়াছি, কি আমরা হইতে পারিয়াছি, কি আমরা হইতে পারি নাই – যুগে […]
শিক্ষক, গবেষক, প্রাবন্ধিক ও সমাজ রূপান্তরকামী বুদ্ধিজীবী-বহুমাত্রিক পরিচয়ে ভূষিত আহমদ শরীফ ছিলেন বিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঙালি চিন্তাবিদ। বর্তমান প্রবন্ধের লক্ষ্য তাঁর বহুমাত্রিক পরিচয়ের স্বরূপ উন্মোচন নয়। এই প্রবন্ধের উদ্দেশ্য আহমদ শরীফের জীবনদর্শনের ভরকেন্দ্রটিকে চিহ্নিত করা। এই ভরকেন্দ্রের নাম ইহজাগতিকতা। সেক্যুলারিজম বা ইহজাগতিকতা রেনেসাঁসের মৌল বৈশিষ্ট্য। সামন্ততান্ত্রিক মধ্যযুগ থেকে বাণিজ্যিক ধনতন্ত্রে উত্তরণের আর্থসামাজিক পটভূমিতে যে […]
তিপান্নতে পৌঁছে হাকিম আব্দুল্লাহর মনে হলো, শরীরটা যেন আর তার দখলে নেই, কথায় কথায় বিদ্রোহ করে। কাজের মাঝখানে অবসাদ উঁকি দেয়, অকারণ বিষণ্নতা মন দখলে নেয়। আরো বিপদ, তার শরীরে দেখা দিচ্ছে জইফ হওয়ার কিছু লক্ষণ। যেমন, তার স্মৃতিরা এখন যেন তিলনা বিলের বাইন মাছ, ধরা দিতে দিতে দেয় না, তার পেটে কিছুই যেন হজম […]
এ ঢাক নিয়ে রাজবিহারী এখন কী করবে…
না, শিবানন্দের মা, আর বুঝি পারলাম না। বুক-ভরা যন্ত্রণা নিয়ে মধুবালার মুখের দিকে তাকিয়ে কথাগুলো বলল রাজবিহারী। আর পারছি না শিবানন্দের মা, আর পারছি না। – আবার কী হলো? এ-কথা বলে স্বামীর দিকে কৌতূহলী চোখে তাকালো মধুবালা। – কী আর হবে? তোমার সুপুত্র বলে দিয়েছে ও আর কোনোদিন ঢাক ধরবে না – বাজাবে না আর […]
শাশ্বতীর যাত্রাপথে সঙ্গী ছিলো না কেউ ছিলো ক্ষুরধার অন্ধকার চারপাশে অনিশ্চিত কালের আঁধারে এগিয়েছি একা একা কণ্টকিত পথে, নিঃসঙ্গতা ফেল্টের টুপির মতো শুষেছে মাথার ঘাম ছিলো তবু বুকে সৃষ্টির তীব্র অনল দহন করেছে যা রক্তমাংস এবং হৃদয়; যা ছিলো সুদূর আলোর রেখা তাও শেষে প্রেতের মতন ছড়িয়েছে নারকী কুহক তবু ছিলো দূর চক্রবালের […]
একটি ছবি আঁকব বলে ক্যানভাস নিয়ে বসে আছি। চিত্রকরদের মতো আমার সামনে কোনো মডেল নেই, প্রকৃতির কোনো প্রান্তে বসে দেখছি না প্রকৃতির লীলা কিন্তু আমি তো জানি না, কোনোদিন না-দেখা কারো ছবি কেমন করে আঁকব! তাই কল্পনার ওপর ভর করে তুলি চালাবার কথা মনে পড়ে, এখন আকাশ-বাতাস নদী-সমুদ্র, মেঘ-বৃষ্টি-রোদ, সবুজ শ্যামল প্রান্তর আর বাংলার মাটি […]
ভাষা মানে সভ্যতার সংবিধান ভাষা মানেরাষ্ট্রচিন্তা ভাষা মানে মুক্তির সনদ ভাষা মানে রৌদ্রদিনের সংস্কৃতি ভাষা মানে প্রফুল্ল দুপুর ভাষা মানে হলুদ বিকেল স্নিগ্ধ রোদের কোলাহল ভাষা মানে সন্ধের তুলসীতলা – ভোরের আজান ভাষা মানে ভালোবাসার নিবিড় আলোপড়া – গভীর গোপন তীব্র মুখর মুগ্ধতা ভাষা মানে লাবণ্য-কবিতা […]
বাদুরের ডানার মতো ক্রমাগত ধূসর হয়ে ওঠে দিন তার ছায়া পড়ে আকাশেও পাতায় পাতায় জড়িয়ে থাকে ঘন কুয়াশার জাল পথে নেমেছে কত নবীন নৃজন – কতজন হেঁটে যায় তবু মানুষের যাতায়াত ক্রমে শ্লথ হয়ে আসে এই শীতে; কয়েকটি বাদলা-পোকা উড়ে উড়ে বেড়ায় ঘুরে ইলেকট্রিকের হলুদ আলোর ভেতর ক্রমশ কমে আসে মানুষের যাতায়াত মাটির […]
কেন ফিরিয়ে দিচ্ছো আমাকে ক্রূর বর্তমান এখন সকালবেলা তুমি দেখতে না পেলেও এখনো সবুজ দেখো আমার পেছনে এখনো বাতাস আমাকে দোলা দিয়ে যায় চাঁদনী রাতের মতো মুখরিত আমার শরীর তবু কেন ফিরিয়ে দিচ্ছো আমাকে শনপাপড়ির মতো চুল বলে? খরায় চৌচির হওয়া জমির মতো এই মুখ আমার তো নয় আমি তো সময়কে বাঁধতে চেয়েছি নদীর স্রোতের […]
ইমেজের অন্তহীন কুয়াশায় বিভোর রহস্য রূপের আঁধার খুঁটে খুঁটে আয়না বসায় এক মাতাল মহুয়া তামারং ক্যানভাসে আঁকে পাতার সবুজধ্বনি, লাল নীল ফুলের আহ্বান পাখিদের ডানার কম্পন চারদিকে টুপটাপ ঝরে পড়ে নিসর্গের শব্দ ধ্যানমগ্নতায় কখনো কুড়ায় আবার কখনো অনন্তের চোখে মুখে মাখে রং
গভীর জল অতল কোনো মেয়ে, কেউ ছিল না সুন্দরী তার চেয়ে। খুঁজতে তাকে গিয়েছে এক কবি, চিনতো না সে ঊষা কালের ছবি। জানতো না সে সূর্য কাকে বলে, সন্ধ্যা থাকে দূরে অস্তাচলে। সেই মেয়েটি রাজার মেয়ে নয়, কবির চোখে আনখ বিস্ময়। সেই মেয়েটি কাজের ফাঁকে ফাঁকে জানলা দিয়ে দেখতো ছেলেটাকে। জানতো না সে ছেলেটা শুধু […]
প্রেমে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছো বহুদিন আগে – কখন শেষ তুমি নিজকে নিজেকে ফেরত দিয়েছিলে? প্রেম একটা মৃত্যু-ইচ্ছা দুজনের মাঝে, যাঁদের প্রেমে বিশ্বাস সুদৃঢ়। তোমাকে ভালোবাসার অর্থ প্রতিদিন বিলীন হয়ে যাওয়া। তোমাকে ছেড়ে যাওয়ার অর্থ অবিলম্বে মরে যাওয়া। আমি যখন ছোট, পরীক্ষা করতাম কতক্ষণ শ্বাসরোধ করে থাকা যায়। প্রতিরোধ একসময় অস্ত্র হয়ে উঠলো। প্রতিটি অধিকার আমার […]
বলতে চাই অনেককিছু কিন্তু কিছুই বলছি না রাগে একটা বেলুন হয়ে যাচ্ছি তবে ফাটছি না! ছোট একটা পাখি দেখে শান্ত হই আর মেঘ মেঘের কারাভান বৃষ্টির কথা ভাবি আর ব্যাঙ আহা, ডোরাকাটা সোনাব্যাঙ! একটা প্রজাপতি কী সুন্দর উড়ে যায় আর একটা মাছি মৌমাছি! বলতে চাই অনেককিছু কিন্তু কিছুই বলছি না! এই তো আয়নার সামনে এখন […]
আমার কি কোথাও যাবার কথা ছিল? আতঙ্ক জাপটে ধরেছে দু-পা! শীতের ওভারকোট অগ্নিসন্ত্রাসের ভয়ে থিতু হয়ে আছে! চারদিকে বিজয়ের উল্লাসধ্বনি, গুচ্ছ গুচ্ছ জলের লিরিক, নৃত্যরত সবুজ বৃক্ষ, হৃদয়ে উড়িয়ে দিয়েছে নৌকার পাল! মৌনতার ওপারে আলোহীন ম্লানরেখা মনে করিয়ে দেয় জীবন এক মহাবিস্ময় ধূসর জগৎ! যতদূর চোখ যায় পৌষের শীতার্ত সন্ধ্যায় রক্তবর্ণ ক্ষত হিম হিম অন্ধকারে […]
বাদামি-হলুদ দিন গত হলে সূর্য ডোবার মুহূর্তে দিলে সাড়া ঘর ছাড়া অলস রাতের ঘ্রাণ-ফুল। পীত সাগরে মাছের কোঠরে লাল শাপলার স্ফীত বক্ষটান। গোধূলির রঙে মিলনের দিন ফুরিয়ে আসছে বুঝি! বিরহের নদী ফুরাবে না যদি নীল মাছিটারে ডেকে নিও।
সংশয় এই সন্তাপ-১ আম্মা চলে গেছেন সে এক পরিচিত অন্ধকার পথ; তাও তো অনেক বছর আগের কাহিনি; এখন অন্ধকার পথগুলো সবই রুদ্ধ-প্রায়, বাসার পাশেই চালের ট্রাকে কারা যেন আগুন দেন। অনাহারে মৃতপ্রায় মানুষগুলোর দীর্ঘশ^াস গরম ভাতের থালায়; রক্ত-নদীর তীরে বসে দেখি : ফুল থেকে পাতা থেকে ঘাস থেকে বিন্দু বিন্দু পানি গড়িয়ে পড়ে। পাশেই দাঁড়িয়ে […]
এখনো মনে হয় কেউ না কেউ আছে কোথাও না কোথাও নিরিবিলি পড়ছে আমার কবিতা শিল্প-খোঁজা, আনন্দ-উদ্বেল তরুণ কি তরুণী বুঁদ হয়ে আছে, জগতের সকল নেতির মাঝে ব্যতিক্রম ওরা আছে, প্রবল নাদ ও ঢাকঢোল পিটানোর মাঝে ওরা মজে আছে, যেন দূর থেকে হাসছেন ঠাকুর। ভাগ হয়ে যাওয়া ব্রহ্মাণ্ডের বুকে ওরা গাইছে মানবিক গান যেন রাশি রাশি […]
ত্রিভুজ কিংবা স্বপ্নে পাওয়া ভবিষ্যৎ
পাশা খেলায় হারজিত এক নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার তবু শেকল পরা পা দেখলে পরাজিত জীবনের কথা মনে পড়ে যখন ঘুম ভেঙে গাছে ওঠার প্রস্তুতি নিয়ে দেখি বহু আগেই রোদ উঠে গেছে গাছে ঘাসের শিশিরে পা ফেলতে গিয়ে বুঝি কুকুরের স্নেহ মাড়িয়ে গেছে শিশির ছুতোরের গড়া কাঠের ত্রিভুজে গিয়ে বসি সময়কে বিদ্ধ করে দেখি রক্তমজ্জায় আর কী কী […]
গ্রাম্যঅথবা শহুরে একটা প্রলেপ থাকে দৃশ্য দৃশ্যান্তর এই হাবভাবে বেড়ে ওঠা ভিন্নতর দৃষ্টিভঙ্গি প্রেক্ষাপট নিয়ে মহাজীবনকে উপভোগ করে তবু শূন্যতা এড়ানো সম্ভব হয় না যা দেখি তা সত্য কি না আর যা দেখি না তা কি মিথ্যা হয়ে যায়? নাড়িপোঁতা গ্রাম মনে এসে ভিড় করে খোলা হাওয়ায় নিজেকে ছড়িয়ে দিই হাঁপানো শহর পার্কে গ্রাম্য পথঘাট […]
মানুষ হেঁটে যাচ্ছে চুকনগরের দিকে শতকে শতক হাজারে হাজার তারা ডুমুরিয়া, দাকোপ, বটিয়াঘাটা, বাগেরহাট, রামপাল, মোল্লাহাট, মোড়লগঞ্জ, শরণখোলা, কচুয়া, পিরোজপুর, গোপালগঞ্জের মানুষ। দাউ দাউ করে জলছে সব বসতভিটা, স্বজনহারা মানুষ ঘন হয়ে ওঠে তারা সরসকাটী, কলারোয়া, ঝাউডাঙ্গার মাঝ দিয়ে বর্ডার পাড়ি দেবে। কেউ-বা ভদ্রা, ঘ্যাংরাইল, তেলিগাতি, শোলমারী পার হয়ে চুকনগরে আসছে করোটির ভিতরে চিন্তা চুকনগর […]
ভোর হলো, এই উন্মার্গগামী পথের কিনারে – সম্মুখে বিস্তৃত পটভূমি নিয়ে ছড়িয়ে আছে আরক্ত সূর্যসম্ভাষণ – হাওয়ায় দুলছে একগুচ্ছ মান্দারের ফুল – আরো কিছু সমুদ্র-পলাশ এইমাত্র চুষে নিল রাত্রিভ্রমণের সমস্ত ক্লান্তি – এ কাদের দেশ – কেবলই ফুল আর পাখিদের মেলা, সর্বত্র শূন্যতা ও সমুদ্রগর্জন – স্তনবতী রমণীর কাঁখে রুপোর গাগরি – আসমুদ্র তার পবিত্র […]
আমার উঠোন ভর্তি মুঠো মুঠো সোনা খুঁটে খুঁটে খায় সুখের পায়রা! পাখিদের আনাগোনা একে অপরের পাশাপাশি – গা ঘেঁষাঘেঁষি! খোশগল্প, আড্ডা ও আনন্দে মত্ত – সুখের পায়রা শুকপাখি, সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের সাথি। ২ আমার উঠোন ভর্তি ময়লা নেই দূর্বাদল, গুল্মলতাপাতা জাপটানো মায়া আবরণ ওঠে না রোদ, ডুবেছে যে সূর্য! আহা! ওই চান্দের সাথে পূর্ণিমার আলাপন – এখন […]
পেটমোটা বাড়িটার দোষ ছিল না কোন তবু সবসময় মনে হতো মায়েরা আলাদা হয়ে কোথাও চলে গেলে পারতেন … এইরকম একটা মনে হওয়া নিয়ে বেড়ে উঠতে উঠতে প্রেমিকদের সাথে বাবারা মিলে যেতে থাকেন। দশক দশক পরের পুরুষও কী প্রাচীন অর্বাচীন ওই আদিম পুরুষেরই মতো – ভাবতে ভাবতে প্রেমিক ছাড়তে ছাড়তে আমরা বড় হতে থাকি … মায়েরা […]
আজকাল অকস্মাৎ ছুটে যেতে ইচ্ছে করে ওই মাঠটায় চারপাশে ঘেরা শক্ত দেয়াল ছাই রঙের; এত সুন্দর তোরণ কোনো প্রবেশদ্বারে দেখা যায় না। গেটের দুপাশে বয়োবৃদ্ধ বৃক্ষ দুজন বিশ^স্ত দারোয়ানের মতো পাহারা দিয়ে যাচ্ছে যেন কেউ উঠে দাঁড়িয়ে আবার কষ্টের কাছে না ছোটে যা জুটেছে সেখানে, সে-জীবনে কিছুই তো প্রশান্ত করেনি হৃদয় ফিরে এসেছে তাই সে […]
একদিন চলে যাবে তুমি, এ হৃদয় হবে মরুভূমি, ভেবে মনে জাগে বড় ভয়! সব স্মৃতি পিছে পড়ে রবে, সব লেখা পুরাতন হবে, ভালোবাসা হবে না তো ক্ষয়! সেই দিন কেঁদে হবো সারা, বই হাতে হবো দিশেহারা, লেখা ছুঁয়ে খুঁজে পাব আলো! সেই দিন বৃথা যাবে বেলা, শেষ হবে ছন্দের খেলা, আকাশের […]
স্কুলে যাওয়ার সময় দেখি আয়েশাপাগলি রাস্তার ড্রেনের পাশে বসে বমি করছে। পথযাত্রীরা যাওয়ার সময় বকে বকে যাচ্ছে। কেউ নাকে রুমাল চেপে চলে যাচ্ছে। আমরা কয়েক বান্ধবী একটু নিরাপদ দূরত্ব রেখে চলে গেলাম। আমার বয়স তখন বারো কী তেরো বছর। সেদিন স্কুল থেকে ফিরেই দেখি সবাই যেন কীসব বলাবলি করছে। জিজ্ঞেস করলে কেউ কিছু বলে না। […]
কবিতা লেখার প্রক্রিয়া দুর্জ্ঞেয়। রোলাঁ বার্থ লিখেছিলেন, সাহিত্য রচনার মুহূর্তে রচয়িতার মৃত্যু ঘটে। সেই মুহূর্তে যিনি লিখছেন, ব্যক্তি হিসেবে তিনি তখন অবলুপ্ত; যাঁর উদ্ভব ঘটেছে, তিনি আর সেই ব্যক্তিটি নন। সেটি আলো-আঁধারিতে নিমজ্জিত অন্য এক সত্তা। যাঁরা লেখেন তাঁরা জানেন, এমন মুহূর্তের মুখোমুখি বারবারই তাঁদের পড়তে হয়। দুর্জ্ঞেয়কে ভাষার ফাঁদ পেতে ধরতে গিয়ে তারা এরকম […]
বাঙালির একজন রবীন্দ্রনাথ আছেন। যাঁকে ছাড়া বাঙালির সুরুচির নির্মাণ কঠিন হতো। যাঁকে ছাড়া বাংলা ভাষা ব্যবহারের অপরূপ সৌন্দর্য উন্মোচিত হতো না। যাঁকে ছাড়া জীবনের গভীরতম দর্শন প্রতিদিনের বাস্তব অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে কীভাবে উপলব্ধ হতে পারে তা জানা হতো না। সেই রবীন্দ্রনাথ কবি, সেই রবীন্দ্রনাথ গীতিকার, সেই রবীন্দ্রনাথ ছোটগল্প-উপন্যাস লেখক, সেই রবীন্দ্রনাথ চিত্রশিল্পী, সেই রবীন্দ্রনাথ দার্শনিক, […]
শ্রদ্ধায় স্মরণে শতবর্ষ : হাবিব তানভীর
প্রথম যৌবনে কবিতার প্রতি হাবিব তানভীরের এক অসম্ভব আকর্ষণ ছিল। ওই সময়েই তিনি পাবলো নেরুদা, নাজিম হিকমত, মায়াকভস্কি, পুশকিন আর ইয়েভতুশেঙ্কোকে ইংরেজি অনুবাদ পড়ে ফেলেছেন। এসব কবিতা পুরো ঔপনিবেশিক বিশ্বকে স্বাধীনতার লড়াইয়ে রত মানুষদের অনুপ্রেরণা ও সাহস জুগিয়েছে। হাবিব চিন্তা-চেতনায় এবং ভাবাদর্শের দিক থেকে নিজের আদর্শকে নিজের মধ্যে গড়ে নিতে প্রয়াস পেয়েছেন। মুম্বাইয়ে পাবলো নেরুদার […]
রিচার্ড ডাউকিন্স : জিন ও মিমসের গল্পকথক
ব্রিটেনের রয়াল সোসাইটি সায়েন্স বুক প্রাইজের ৩০তম বার্ষিকী অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০১৭ সালের জুলাই মাসে। তারা পাঠকের ভোটে নির্বাচিত করেছে ‘সর্বকালের শ্রেষ্ঠ প্রভাবশালী বিজ্ঞান গ্রন্থ’ – আর ডারউইনের অরিজিন অফ স্পিসিস কিংবা নিউটনের প্রিন্সিপিয়া ম্যাথেমাটিকার মতো যুগান্তকারী বইগুলিকে হারিয়ে এ-অভিধাটি জয় করে নিয়েছে একজন স্বল্পপরিচিত জীববিজ্ঞানী ও সমাজচিন্তক রিচার্ড ডাউকিন্সের লেখা বই দ্য সেলফিশ জিন। এ-তালিকায় […]
পৃথিবীর সবচেয়ে পুরনো শহরগুলির একটায় বসে ইতিহাসের পাতায় পাতায় গল্প খুঁজে বেড়ানোর এক শিহরণ জাগানো অভিজ্ঞতাই হলো এবার। প্রস্তর যুগের চিহ্ন পাওয়া গেছে এখানে, এতটাই প্রাচীন এই দেশ আর এর রাজধানী শহর। বলা হয়ে থাকে, ৭২৫০ খ্রিষ্টপূর্বে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল আম্মান শহর, যার অলিতে-গলিতে শুধু প্রাচীন আমলের গন্ধই ভেসে বেড়ায় না, বর্তমানও হয়ে আছে দারুণ বাঙ্ময় […]
বাংলা ভাষাভাষী জগতে শামসুর রাহমানের মুখ্য পরিচয়, তিনি কবি। বেশ কিছুদিন থেকে তাঁকে দেশের প্রধান কবি আখ্যায়িত করা রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। যখন তিনি এভাবে আখ্যায়িত হন, সেটা যতই বাহুল্য হোক, যতই পুনরাবৃত্তিমূলক হোক, আমরা বিনা তর্কে আমাদের সম্মতি জানাই। সময়ের হিসেবে মোটামুটি সিকি শতাব্দীকাল ধরে কবিতার এই উচ্চাসনে তাঁর অধিষ্ঠান। ইতোমধ্যে কবিতায় নতুন কণ্ঠস্বর শোনা […]
উনিশ শ তেরোর সতেরোই ফেব্রুয়ারি এলিয়ট কেম্ব্রিজে এক ঘরোয়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এই কেম্ব্রিজ্ ব্রিটেনে নয়, যেখানকার বিশ্ববিদ্যালয় বিখ্যাত; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেট্স্ রাজ্যে এই কেম্ব্রিজ্; [ম্যাসাচুসেট্স্ নিয়ে রবীন্দ্রনাথের একটি ঠাট্টার কবিতা আছে; দেখুন : খাপছাড়া;] ম্যাসাচুসেট্সেও একটি বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় আছে; তার নাম হার্ভার্ড্; এলিয়ট তখন হার্ভার্ডে পড়াশোনা করেন। অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়েছিল আন্ট্ হিঙ্কলির বাড়িতে। […]
মানুষ ও প্রকৃতি : সম্পর্কের নানা স্তর
দ্বান্দ্বিক সম্পর্কে আবদ্ধ মানুষের সঙ্গে মানুষ, মানুষের সঙ্গে প্রকৃতি। ভিন্ন দুই ক্ষেত্র। উভয় ক্ষেত্রেই আছে সম্পর্কের নানা স্তর। তুলনা করে দেখলে গভীর কিছু মিল-অমিল চোখে পড়ে। বিষয়টা ভেবে দেখবার যোগ্য। মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কটা হতে পারে সহযোগিতার, প্রতিযোগিতারও। সীমাবদ্ধ সম্পদের বণ্টন নিয়ে ঘটে দ্বন্দ্ব। সম্পদের বর্ধনের জন্য প্রয়োজন হয় সহযোগিতা। জীবনের পথ মসৃণ নয়; প্রশ্ন […]
হাঁটার কথাও উঠল, ভাষার কথাও উঠল। ভাষার গতি কেমন – হাঁটা, না ওড়া, না চক্কর-মারা? আমি এখানে ভাষা বলতে শুধুই মুখের কথা ধরছি। জন্ম থেকেই শুনে আসছি – ক্রোশেষু জঙ্গমতে ভাষা। সব ভাষাই কি ক্রোশে-ক্রোশে বদলায়? সংস্কৃত প্রবাদটিকে একটু ঘুরিয়ে জিজ্ঞাসা করা যায়, ক্রোশে-ক্রোশে বদলালেই কি ভাষা? অন্তত সংস্কৃত, আরবি, ল্যাটিন – এগুলো আইন-কানুন দিয়ে […]
তাঁর মায়ের মৃত্যু হয় মাত্র পঁয়ত্রিশ বছর বয়সে, তাই অন্নদাশঙ্কর রায়ের মনে এই ধারণা বদ্ধমূল হয়েছিল যে, তিনিও বাঁচবেন মোটে পঁয়ত্রিশ বছর। সত্যাসত্য উপন্যাসের পঞ্চম খণ্ড লিখতেই যখন সে-বয়স এসে গেল, তখন তিনি থমকে দাঁড়িয়েছিলেন কিছুকাল। মৃত্যুর জন্যে বেশ খানিকটা অপেক্ষা করে তবে প্রবৃত্ত হলেন ষষ্ঠ বা শেষ খণ্ড রচনায়। তারপর তিনি ভাবলেন, তিনি হয়তো […]
রূপকথার দুই গ্রিম-ভাইয়ের এক ভাই – ইয়াকুব গ্রিম – আধুনিক তুলনামূলক ও ঐতিহাসিক ভাষাতত্ত্বচর্চার ক্ষেত্রে পথিকৃৎ ছিলেন। তাঁর মতে, জাতি হচ্ছে জনগণের সেই সমগ্রত্ব যা একই ভাষায় কথা বলে। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষার্ধে জাতির সংজ্ঞানিরূপণে উত্তরোত্তর ভাষার গুরুত্বের প্রতি দৃষ্টি দেওয়া হয়। ভাষার ওপর ভিত্তি করে সম্মিলিত ইতালি ও সম্মিলিত জার্মানির জন্ম। নরওয়ে ১৯০৫ সালে সুইডেন […]
১৯৫৭ সালে প্রকাশিত হয়েছিল বুদ্ধদেব বসুর অনুবাদ-গ্রন্থ, কালিদাসের মেঘদূত। আমি হাতে পেয়েছিলাম ষাট সালের দিকে। সংস্কৃত জানি না। স্কুল-ফাইনাল পর্যন্ত সংস্কৃত আমার পাঠ্যবিষয় ছিল, চূড়ান্ত পরীক্ষায় প্রচুর নম্বর মিলেছিল। ভাষাটার কিছুই না জেনে এত নম্বর কীভাবে পাওয়া যায়, সে-রহস্য এখন আমি জানি; সম্মানসহ সংস্কৃতে এম. এ. পাশ করার পরেও ওই ভাষাটির মর্মে একটুও ঢুকতে না […]
ধানখেতের ধারে কাঁটাতার। টানা কাঁটাতারের দুই দিকে এই বিহানবেলায় দাঁড়িয়ে রয়েছে পরস্পরের দিকে পিঠ ফিরিয়ে দুইজন মানুষ। কেউই বলছে না কোনো কথা। ওরা প্রতিবেশী। মাঝে-মাঝে এইরকম হয়। মাঝে-মাঝে কাঁটাতারে আটকে থাকে বহতা সময়। কেউই বলে না কোনো কথা। মানুষ বলে না কথা, সমুদ্র ও নদীও বলে না। পাহাড় তো জন্মাবধি নির্বাক, কখনও সে কোনো ব্যাপারে […]
কী করে বলি ব্যর্থ জীবন জন্মেই পেয়েছি মাতার স্নিগ্ধ স্তন্য দু’চোখে দেখেছি শ্যাম সমারোহ চারিদিকে জনারণ্য। গ্রীষ্মে পেয়েছি সুশীতল ছায়া শ্রাবণে পেয়েছি বৃষ্টি যৌবনে দেখেছি প্রেয়সীর মুখ গীতি-সুধাময় দৃষ্টি। আজকে যখন রক্ত ভাটায় নিঃস্ব তখনো দেখি, কী গভীর প্রেমে সজ্জিত এই বিশ্ব। জোয়ারের শেষে তাই তোমার আমার সন্ধি বয়েস খাঁচায় আমরা হবো না বন্দি। সৃষ্টির […]
যেতে যেতে : দিন যায় রাত্রি যায়
দিন চলে যায়, পায়ে পায়ে রাত্রি আসে স্বাভাবিকভাবে আসে, আসতে হয় আসে নিজস্ব নিয়মে আসে যখন যৌবন ছিল রক্তে শোনা যেত বাঘিনীর ডাক চিতাবাঘ এ কোণে ও কোণে, জঙ্গলে, সাবুই ঘাসের ঝোপে লুকিয়ে থাকতো উত্তুঙ্গ জীবনে ঘাপটি মেরে থাকা মৃত্যুর মতন স্বপ্নের মতন বিশ্বাসের মতো তারা সব ভেসে যাচ্ছে তারা আর দেহ নয়, ছায়া একটা […]
বালক, তুমি একদিন আমাদের কবি হবে, উড়ে যাবে কালের ফুৎকারে – আমি সেই শিরোনাম ছেপে দিচ্ছি আজকের মেঘাবৃত সংবাদপত্রে। দূরপ্রান্ত বালক, তোমাকে স্বাগত এবং শোকের ভেতরে টানটান আমি তোমার ওষ্ঠের ভেতরে উপস্থিত, তোমার অভিষেকে আমি উপস্থিত। এই ঝকঝকে দুরবিন, ওই প্রজ্বলিত নীলাঞ্চল, এই চোখ, ওই নক্ষত্র, এই বিকাশমান দিন, ওই অস্তমান বিস্তার, এ সকলই একদা […]
কি আছে অনাস্বাদিত? ঠোঁট রেখে কঠিন শিলায় পাথরের গন্ধ শুঁকি পেতে চাই সৃষ্টির লবণ। গ্রানিটে জিহ্বা লাগে, আলজিহ্বে শ্যাওলার স্বাদ স্বাদ নয়, এ কেবল পাথর ও রক্তের বিবাদ। অভুক্ত কবির মুখে, আলজিহ্বে জমেছে যে পানি এ দিয়ে নরম হয় জগতের প্রকৃতিনিচয়, কেবল অনম্য তুমি। পাথরের চেয়েও পাথর। হাসো বাসো নাশ করো মানুষের সব বরাভয়। ২ […]
রক্ত এবং মাংস জুড়ে তোর কেন এই ভয় ভালো যদি বাসিস নারী কেনরে সংশয় ভালো যদি বাসিস তবে মাতাল হয়ে যা অন্ধ এবং বধির হয়ে অধীর হয়ে যা ভালো যদি বাসিস নারী ঢেউ তুলে যা মনে ভালোবাসা মরণ খেলা খেলবি দুইজনে তুইতো জানিস কেমন ক’রে বাসতে ভালো হয় কেমন ক’রে ঝড়ের মতো বাতাস শুধু বয় […]
আদিতে তুমিই ছিলে অন্তে ছিলে তুমি আকাশ সমুদ্র ছিলে, ছিলে বনভূমি আঁধার আলোর মতো ছিলে গোধূলিতে বিশাল প্রকৃতি জুড়ে বিপুল সংগীতে প্রবল অস্থির ছিলে বাতাসের স্বরে নদীর বিস্তারে আর পাতার মর্মরে অস্থিতে মজ্জায় তুমি ছিলে চিরকাল আমার মাংসের মধ্যে আমার কঙ্কাল চুম্বনে নিমগ্ন একা ছিলে আলিঙ্গনে উন্মত্ত বৃষ্টির গানে শ্রাবণে শ্রাবণে স্তম্ভিত শব্দের মধ্যে ধ্বনিত […]
এবার একটি কবিতা দিতে একটু দেরি হল। খুব দেরি হয়তো নয়, তবুও তো। আসলে আমার কোনো দোষ নেই। কবিতাটি এসে গিয়েছিল, আশেপাশেই ঘুরপাক খাচ্ছিল। কখনো পাখির পালকের মতো উড়তে উড়তে, কখনো ঝিঁঝির ডাকের মতো ক্রমাগত, কখনো জানলার খড়খড়ির ফাঁকে আলো, কবিতাটি এদিক ওদিক ঘুরপাক খাচ্ছিল। এর মধ্যে কয়েকদিন খুব ঠান্ডা পড়ল, একদিন […]
চঞ্চুতে চঞ্চুতে প্রেম হলে মন্দ নয়। পাখি সব যেমন প্রণয় করে পাখার ঘর্ষণে, পালকের স্পর্শ পেলে শিহরণ ঘটে যায়, তেমনি উড়ালে ভালোবাসা হবে আমাদের। খড়কুটো ঠোঁটে নিয়ে বাঁধব না কেউ ঘর, বাবুই পাখির কারুকাজ হয়ত হবে না। কোকিলের মতো ডিম পেড়ে যাব অন্য কারো ঘরে। পাখিরা জানে না কবে কার বাসে জন্মেছিল! কোথায় নিবাস ছিল […]
তুমি বারবার নতুন কিছু শুনতে চাইলে বোল্লে : ‘আমাকে নতুন কিছু শোনাও’ আমি বোল্লাম : ‘অমাবস্যার পুঞ্জপুঞ্জ অন্ধকার একদল কালো মুখোশ-পরা ডাকাতের মতো শিকার করতে চাইছে শাদা খরগোশের মতো কম্পমান চাঁদটাকে’ তুমি বোল্লে : ‘এর কোনো অর্থ নেই!’ আমি আবার বোল্লাম : ‘তুমি কী শোনোনি তিনটে মাছের আক্রমণে নিহত মাছরাঙা প’ড়ে আছে নদীর ওপারে’ তোমার […]
তাড়া নেই কোথাও যাওয়ার, অপেক্ষায়ও ব’সে নেই কেউ – বিছানায় রোদের ধমক নির্বিকার পর্দা জানালার। সাদা-কালো ফটো ঝাপসা বড়ো – কালো চুল। বিস্মিত নয়নে শুধু ওড়ে শুভ্র কেশদাম। কাজ নেই, অবসরও নেই বইপত্র নাড়াচাড়া করি, সময়ের ধুলোর আলপনা মুছে রাখি, ফেরে না সময়। মন চায় যেতে যে আড্ডায় হায় নেই শরীরের সায়। চমকে উঠি রিকশায় […]
হলফনামা ‘আমি, নিজামালি মুঘল, জন্মদাতা গোলামালি মুঘল হাল সাকিন হুকুমাসন, থানা কোতয়ালী, পেশা হুকুমর্বদার, কর্মসূত্রে এবং ভোগদখলে বাংলাদেশের নাগরিক বটে; দালাল আইনে আট নম্বরি ধারায় আমার আটকাদেশ নাই, রাষ্ট্রবিধানের পরিপন্থি কোনো কর্মেও যুক্ত নহি – তদুপরি তথাকথিত অস্ত্র ও বারুদ, মাদক ও ঘাতকের সংস্পর্শ-রহিত, হক-হালালের উপার্জনে প্রতিপালিত হয় বৈধ পরিবার; মাথার উপরে মেঘ এবং […]
১.ওয়াশিংটন দুরন্তকে বাগে এনেছ বিদ্রোহীকে আপোস কিন্তু তোমার হাত ফস্কে শোল পালালো সেটাই আপসোস আমার সেটাই আপসোস! ২. চমস্কি আপনি কারো চাকর নন আপনি কারো মাতব্বর নন ভিক্ষে দেননি, ভিক্ষে নেননি পৃথিবী জুড়ে তবু আপনার ভক্ত অগণন। গোলাপ খেয়ে গোলাপ বমি করে মরার কথা ছিল না যাদের তারাও গেছে মরে। ওরা যখন গায়ের জোরে, বোমার […]
আমি সেই সময়ের কথা বলছি, যখন আমরা সদ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি। ষাটের দশকের শুরু। আমাদের বৌদ্ধিক-সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে আজকে যা-কিছু দৃশ্যমান তার বীজবপনের সময়, আমাদের জাতিসত্তার বিকাশ ও বিবর্তনের সময়, আমাদের আত্মপরিচয়ের অবয়ব-ধারণের থরথর কম্পমান সময়। একটি রুদ্ধকণ্ঠ সমাজের বিবরে পচনের পঙ্কে পা রেখেও আমরা উদ্বেল হয়ে উঠতে পারতাম অনেক পরিচর্যায় লালিত এক অনাগত উচ্চকিত […]
আইনস্টাইন এবং অবিস্মরণীয় কোয়ান্টাম-বিতর্ক
আইনস্টাইন কি সবসময়েই নির্ভুল ছিলেন? পদার্থবিজ্ঞানের যুগান্তকারী গবেষণায়, নতুন ধারণাসৃষ্টির বিস্ময়কর প্রতিভায়, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে শান্তি-আন্দোলনের একনিষ্ঠ সংগ্রামে এবং এমনকী দুইবার জার্মান জাতীয়তা পরিত্যাগ করার ব্যাপারেও আইনস্টাইন কি সবসময়ে ঠিক ছিলেন? প্রশ্নহীন শৃঙ্খলাপূজারী জার্মান জাতির অতি অনুগত একজন হওয়া গতানুগতিকতাবিরোধী আইনস্টাইনের পক্ষে যে অসম্ভব ছিল, একথা সহজেই বলা চলে। অন্যদিকে ইহুদি রাষ্ট্র স্থাপনের ব্যাপারে তিনি […]
কথা ছিল, কার্জন হলের সামনের চত্বরে অপেক্ষা করবে। সময় জানিয়েছিল এগারোটা। সাজিদ কথামতো ঠিক সময়ই এসেছে। এবং তারপর থেকে অপেক্ষা করছে। কিছুক্ষণ সদ্য চারা গজানো ফুলের বেডগুলো দেখে, তারপর দেখে মাঝারি সাইজের মেহগিনি গাছের সারি। ডালে ডালে নোনা ফলের সাইজের ফল ধরেছে। কিছুটা আগাম হলেও অশোক গাছের ডালে একটা দুটো লাল রঙের ফলের থোকাও চোখে […]
স্যার, আমি পিশাচ-সাধনা করি। আমি কৌতূহল নিয়ে পিশাচ- সাধকের দিকে তাকালাম। মামুলি চেহারা। মুখভর্তি খোঁচা খোঁচা দাড়ি। মাথায় চুল নেই। শরীরের তুলনায় মাথা বেশ ছোট। সেই মাথা শারীরিক কোনো অসুবিধার কারণেই হয়তো সারাক্ষণ বামদিকে ঝুঁকে আছে। তার হাতে কালো কাপড়ে ঢাকা একটা পাখির খাঁচা। খাঁচায় যে পাখিটা আছে সেটা খুব সম্ভব কাক। পা ছাড়া পাখিটার […]
সংগীতহীন অন্ধকারে চলেছে যে পথিকেরা
ঢাকায় আমরা সত্যেন বোস-কাজী মোতাহারদের গানের আড্ডার কালটি পাইনি। কিন্তু পেয়েছি তার স্মৃতি। এই আড্ডার কথা জেনেছিলাম স্বয়ং আড্ডার আড়তদারের মুখেই। একষট্টি সন। কর্ণফুলির ইসমাইল সাহেব মেলা টাকা দিয়েছেন ছায়ানটকে, স্কুল আরম্ভ করবার জন্যে। ছয় হাজার টাকা! স্থির করলাম আমরা যন্ত্রপাতি যতীন থেকেই নেব। যতদূর মনে পড়ে সন্জীদা তাঁর বাবা কাজী মোতাহার হোসেন সাহেবকে বলেছিলেন […]
জীবনানন্দ দাশ-প্রেমিক ক্লিন্টন বুথ সিলি
বিগত শতাব্দের মাঝামাঝি সময়ে জীববিজ্ঞানের স্নাতক শীর্ণকায় এক মার্কিন যুবক সমাজহিতৈষণার ব্রত আর নীলবর্ণ চোখে রাজ্যভরা স্বপ্ন নিয়ে সেই সুদূর মার্কিন দেশ থেকে পিস কোরের ভলান্টিয়ারের কাজ নিয়ে এলেন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে। তখন কেনেডি আমল। মানবকল্যাণে সাহায্য-সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে পিস কোরের ছেলেমেয়েরা ছড়িয়ে পড়ল দেশে দেশে, মফস্বলে, শহরে গ্রামে-গঞ্জে। এমনি করেই রৌদ্রকরোজ্জ্বল ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের সুদর্শন […]
আবুবকর সিদ্দিকের ‘কংকালে অলংকার দিয়ো’ পরকালযাত্রার পূর্বকথন
আবুবকর সিদ্দিক বহুমাত্রিক, বহুকৌণিক লেখক-কবি হিসেবে স্বীকৃত। তিনি বস্তুনিষ্ঠ ও জীবনবাদী লেখক। শ্যামল যাযাবর। তাঁর লেখায় বারবার বিষয়, লিখনশৈলী ও জীবনদৃষ্টির পরিবর্তন ঘটেছে – পরিবর্তিত সময়-সমাজ-জীবনবোধের পরিপ্রেক্ষিতে। অর্থাৎ শিল্প-সাহিত্যাঙ্গনে তিনি […] The post আবুবকর সিদ্দিকের ‘কংকালে অলংকার দিয়ো’ পরকালযাত্রার পূর্বকথন appeared first on কালি ও কলম .
জন্মদ্বিশতবর্ষে মাইকেল : তাঁর বিদ্রোহের স্বরূপ
বাংলা সাহিত্যে বিদ্রোহী কবি হিসেবে কাজী নজরুল ইসলাম অবিস্মরণীয়। তাঁর পরেও কোনো কোনো কবি বিদ্রোহ বা দ্রোহের কবি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে কবিমাত্রই অনিয়ম ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে দ্রোহ ঘোষণা করেন। […] The post জন্মদ্বিশতবর্ষে মাইকেল : তাঁর বিদ্রোহের স্বরূপ appeared first on কালি ও কলম .
চারুকলায় প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার হীরকজয়ন্তী : আমার চারুকলা (১৯৬৬-৭২)
ভারতবর্ষের স্বাধীনতা অর্জিত হয় ১৯৪৭ সালে, তবে ধর্মীয় সংখ্যাধিক্যের ভিত্তিতে দেশটি বিভক্ত হয়ে দুটি রাষ্ট্রের উদ্ভব ঘটে – ভারত ও পাকিস্তান। এ বিভক্তির ফলে দেশ দুটির হিন্দু ও মুসলমান উভয় […] The post চারুকলায় প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার হীরকজয়ন্তী : আমার চারুকলা (১৯৬৬-৭২) appeared first on কালি ও কলম .
জাহিদুল হকের ‘এইখানে বহু শব, বহু মৃত’ : অস্তিত্বের কাব্যিক কাঠামো
কবি-সম্পাদক আবুল হাসনাত তাঁর সম্পাদিত মুক্তিযুদ্ধের কবিতা (ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৪) সংকলনের ‘ভূমিকা’য় বলেছিলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ আমাদের দুর্গত দেশের জীবন ও মননে হীরকখণ্ডের মত এখনও দ্যুতিময়। বাঙালির শিল্পসাহিত্যে তো বটেই, সামাজিক ইতিহাসের বর্ণময় […] The post জাহিদুল হকের ‘এইখানে বহু শব, বহু মৃত’ : অস্তিত্বের কাব্যিক কাঠামো appeared first on কালি ও কলম .
ঢাকায় জীবনানন্দ : ব্রাহ্ম সমাজ, গোলাপি বেনারসি এবং কালাচাঁদ গন্ধবণিকের মিষ্টির খোঁজে
বরিশালের সন্তান জীবনানন্দ দাশ ১৯২৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে পরের বছর ১৯৩০ সালের মার্চ মাসের মাঝামাঝি কালের মধ্যে কোনো এক সময় ঢাকা শহরে এসেছিলেন বিয়ের পাত্রী দেখতে। তিনি তখন দিল্লির রামযশ […] The post ঢাকায় জীবনানন্দ : ব্রাহ্ম সমাজ, গোলাপি বেনারসি এবং কালাচাঁদ গন্ধবণিকের মিষ্টির খোঁজে appeared first on কালি ও কলম .
বাংলার মানুষ শিল্পকলার চর্চা করছে সুপ্রাচীনকাল থেকেই, তার প্রমাণ পাণ্ডুরাজার ঢিবিতে আবিষ্কৃত কৃষ্ণ-লোহিত সাংস্কৃতিক স্তরে (তাম্রপ্রস্তর) প্রাপ্ত চিত্র – নকশা-অঙ্কিত মৃৎপাত্রের টুকরা। একটি টুকরায় কালো মাটির পাত্রে ধূসর সাদা রেখায় […] The post বাংলার প্রাচীন চিত্রকলা appeared first on কালি ও কলম .
কোনটি বেশি, কোনটি কম, পরিমাপ করা কঠিন। আনন্দ এবং বেদনার দুটি অনুভূতির মিশেলে এ-এক নতুন অনুভূতি। গুরু মহর্ষি বিশ্বামিত্র, তাঁর প্রিয় শিষ্য গালব, দুজনই আনন্দ-বেদনার যৌথ স্রোতধারায় ভাসছেন। গালবের শিক্ষালাভ […] The post শূন্যতার ভার appeared first on কালি ও কলম .
একদিন ছাদে হাঁটতে হাঁটতে নিশি দেখলো, বাহ, মজার ব্যাপার তো! কোত্থেকে যেন এক জোড়া দোয়েল এসে ঘর-সংসার পেতে বসেছে পশ্চিমকোণে পড়ে থাকা প্লাস্টিকের ফিরোজা রঙের স্যানিটারি পাইপটার খোপে। জগৎ-সংসারের কিছু […] The post সহসা দুপুরে দহন appeared first on কালি ও কলম .
রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী বিজয়া চৌধুরী
অধুনা বিস্মৃত রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী বিজয়া চৌধুরীর জন্ম শ্রীভূমি সিলেটে। জীবনের উত্থানকালপর্বটি তিনি ইংল্যান্ড, জার্মানি প্রভৃতি দেশে কাটিয়েছেন বলে বাংলাদেশ-ভারতের বাংলাভাষী মানুষের কাছে বিশেষ পরিচিত নন। তবে একেবারে অর্বাচীনও নন। তাঁর জীবনেতিহাস […] The post রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী বিজয়া চৌধুরী appeared first on কালি ও কলম .
একটাও বাদ দেবে না, সব – সব আনবে কিন্তু – হাতে লম্বা একটা ফর্দ ধরিয়ে হুঁশিয়ার করে দেয় মর্জিনা বেগম। জানে স্বামী আবু কালাম বেভুলা ধরনের মানুষ। জীবনে ঠিকঠাক বাজার […] The post শূন্য মাঠের রেফারি appeared first on কালি ও কলম .
কী বাঁধনে বেঁধেছ এক অজানা অচিন মায়াবী সুরে কত আকুতিতে চেয়েছি মুক্তি ছুটে চলে গেছি দিগন্ত দূরে তবু সার্সির মতো মোহিনী মায়ায় রেখেছ জড়িয়ে মুগ্ধ করে বারেবারে তাই ফিরে আসি […] The post বেহুলা বাংলা : সনেট এক appeared first on কালি ও কলম .
শুনলাম যারা অনেক উঁচু অট্টালিকায় থাকে – আকাশের সিঁড়ি বেয়ে অনেক ওপরে – নামিদামি ফ্ল্যাটে তারা বৃষ্টির শব্দ শুনতে পারে না। এই রকম ফ্ল্যাটবাসীদের আরো কতিপয় অসুবিধা আছে। যেমন তাদের […] The post শোনা কথা appeared first on কালি ও কলম .
সংকীর্ণ কক্ষে নয়, রয়েছি কক্ষপথে, পৃথিবীমঞ্চে পৃথিবী ছাড়িয়ে ওই আকাশগঙ্গায়ও মঞ্চে আমরা দুজনই কুশীলব মনুষ্যদর্শকে নেই আগ্রহ আমাদের শুনবে ও দেখবে সৃষ্টিজগৎ আর অদৃশ্য ক্ষুদ্র প্রাণ এমনকি সাগ্রহে লক্ষ করবে […] The post আমরা, জলে-স্থলে-ছায়াপথে appeared first on কালি ও কলম .
এত আবর্জনা জমছে! বলতে পারছিনে! ফেলতেও পারছিনে! দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে – আবর্জনার মধ্যে বসবাস! আবর্জনা ফেলল কে? জানার পরও তা বলতে পারছিনে! পরিবেশ এতটা অসহনীয় […] The post জঞ্জাল appeared first on কালি ও কলম .
ধর্মগ্রন্থের মতো দেহ সংরক্ষণ করতে অতীতে ইচ্ছে হলে নতুন ভাষার শিহরণে মেলে ধরতে মধ্যরাত আবার রেহালে রেখে দিতে দিনের পর দিন অতীতে তোমরা ছিলে এমনই অপঠিত গ্রন্থের অক্ষর দূর থেকে […] The post দূতকুমার appeared first on কালি ও কলম .
মন্ত্রমুগ্ধ হই আমি, ভালোবাসি বলে মনের ভেতরে খুব ভাংচুর চলে বুকে রেখে ভাঙা কাঁচ পা ফেলে চলি অযুত অবহেলায় নিজে নিজে জ্বলি পড়ে থাকা ছাই কেউ দেখে না তো চোখে […] The post পাথরের ঘুম appeared first on কালি ও কলম .
সমস্ত শরীরে প্রার্থনার পরশ পেয়ে রাতকানা রাজহাঁসগুলো ছুঁয়েছে নিরন্তর স্তব্ধতাকে। জ্যোৎস্নার আড়ালে নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে হাসতো কপোতাক্ষ জলের শান্ত সেই মেয়ে। এখন সে স্বপ্নের বুকে মাথা রেখে কান পেতে শোনে অন্ধকারে […] The post শূন্য থেকে শূন্যতায় appeared first on কালি ও কলম .
লোহা-লক্কড়ে চড়ে নিজেকে উড়ালপঙ্খির শূন্য জানালার পাশে প্রিয় বন খেলে যায় সাতগুটিবাঘ। বাঘ তো হিংস্র নয় মনের বাঘের চেয়ে – চলো ঘুরে আসি বনের কাছে গিয়ে … বন মানে আমাদের […] The post হৃদয়পুর ট্রেন এক্সপ্রেস appeared first on কালি ও কলম .
অনেক কিছুই বদলে যাচ্ছে – যেমন বদলে গেছে আমার চুলের রং আয়নার সামনে দাঁড়ালে দেখি বদলে যাচ্ছে চেহারার আদল, আঁতকে উঠি এই যাঃ, বুড়ো হয়ে যাচ্ছি তো! এখানেই শেষ নয়, […] The post মুথাঘাস appeared first on কালি ও কলম .
বইছে উতল হাওয়া-বুকে নিয়ে অর্থহীন গান রোদেরা দোকান গুটিয়ে চলে যাচ্ছে দক্ষিণখণ্ডে; মুমূর্ষু শরৎ সাক্ষ্য দেবে বয়স বাড়ছে আমাদেরও তবুও কেউ কাউকে মান্যতা দিচ্ছি না! এভাবেই, সরে যাওয়া ভালো – […] The post মুমূর্ষু শরৎ সাক্ষ্য দেবে appeared first on কালি ও কলম .
ঘুম ভাঙলে সকালবেলা গরম চা চাই এক পেয়ালা না-পেলে চা মেজাজখানা তিরিক্ষিহয় উথলে ওঠে মনের জ্বালা। সাব-এর মেজাজ বিবির মেজাজ বাড়ে দ্বিগুণ গলার আওয়াজ ঠিকা-ঝি আর চাকরকে কয় চা কর […] The post চা-বন্দনা appeared first on কালি ও কলম .
ছাত্রজীবন সমাপ্তির পর ষাটের দশকের মাঝামাঝি থেকে বর্তমান সময়ে তৈরি রফিকুন নবীর শিল্পকর্মের যে বিশাল আয়োজন সেটি শুধু সময়ের ব্যাপ্তিতে নয়, সকল মাধ্যমে কাজের দৃষ্টান্ত হিসেবেও পূর্বাপর (retrospective) প্রদর্শনী বলা […] The post রফিকুন নবী : গণজীবনের চিত্রকর appeared first on কালি ও কলম .
ঘরের উত্তর দিকের রাস্তামুখী দরজাটা খুলে তিনি অনুভব করেন হেমন্ত এসে গিয়েছে। বাতাসে হিম ভাব, গাছের পাতায় শিশিরের মৃদু শব্দও শোনা যাচ্ছে। চারটে কুকুর কুণ্ডলী পাকিয়ে শান্তভাবে পৌরসভার ল্যাম্পপোস্টের নিচে […] The post কেবলই দৃশ্যের জন্ম হয় appeared first on কালি ও কলম .
বিস্ফোরক এ-সময়ে নিজার কাব্বানির কবিতা
অনুবাদ : গোলাম মোরশেদ খান সিরিয়ান কবি, প্রকাশক ও কূটনীতিবিদ নিজার তওফিক কাব্বানি (২১শে মার্চ ১৯২৩-৩০শে এপ্রিল ১৯৯৮) তাঁর কাব্যে প্রেম, শরীরী ভাষা, নারীবাদ, ধর্ম ও আরব জাতীয়তাবাদকে প্রাধান্য দিয়েছেন। […] The post বিস্ফোরক এ-সময়ে নিজার কাব্বানির কবিতা appeared first on কালি ও কলম .
চাঁদের গাড়িটি কাইকুই করে থামলে ঝিমুনি ভেঙে চোখ কচলে দেখি, চারধারে ধূসর আরুশি। আজকের মতো শুকতারার আলো মিশে গেল ভোরের আলোয়। মরা চাঁদ ঢলে পড়েছে পুব আকাশে, আর ফ্যাকাসে ভোর […] The post বিজনের নির্জনে appeared first on কালি ও কলম .
কবির বঙ্গবন্ধু, কবিতায় বঙ্গবন্ধু
কামাল চৌধুরী শুধু একজন সুখ্যাত কবিই নন, তাঁর সম্পাদনা-দক্ষতাও অনন্য। মহাকালের তর্জনী গ্রন্থের ভূমিকা থেকে শুরু করে কবিতা নির্বাচন পর্যন্ত সর্বত্রই তাঁর সেই নৈপুণ্যের ছাপ সুস্পষ্ট। বইটির ভূমিকায় তিনি বঙ্গবন্ধুকে […] The post কবির বঙ্গবন্ধু, কবিতায় বঙ্গবন্ধু appeared first on কালি ও কলম .
আলতাফ শাহনেওয়াজের কাব্যগ্রন্থ গ্রামের লোকেরা যা বলে হাতে নিয়ে প্রথমে ভেবেছিলাম কবিতাগুলি গ্রামীণ মিথ নিয়ে হবে। গ্রাম ও গ্রামীণতার অভিজ্ঞতায় বয়ে চলা হাজার বছরের আলেখ্যের সঙ্গে মিলেমিশে যাবে কবির নিজস্ব […] The post কবিতায় স্মৃতি-বিস্মৃতির সুর appeared first on কালি ও কলম .
কালি ও কলম সাহিত্য সম্মেলন ২০২৪
কুড়ি বছর পার করে একুশে পা রেখেছে সাহিত্য শিল্প ও সংস্কৃতি বিষয়ক পত্রিকা কালি ও কলম।একটি মানসম্পন্ন সাহিত্যপত্রিকার অভাবমোচনের লক্ষ্য নিয়ে কালি ও কলম আত্মপ্রকাশ করেছিল। সৃষ্টিশীলতা ও মননশীলতার যুগ্মস্রোত […] The post কালি ও কলম সাহিত্য সম্মেলন ২০২৪ appeared first on কালি ও কলম .